কে জানে মা তব মায়া মহামায়ারূপিণী
কে জানে মা তব মায়া মহামায়ারূপিণী
বিরাজ সর্বত্র তুমি বিশ্বব্যাপিনী॥
প্রথমে মা মহাকালী দ্বিতীয়ে মা তারা
তৃতীয়ে ষোড়শীরূপ পুরিল ত্রিপুরা
চতুর্থে ভুবনেশ্বরী পঞ্চমে ভৈরবী নারী
তেমন বিচিত্রিময়ী হর-মন-বিমোহিনী॥
ষষ্ঠে ছিন্নমস্তা রূপ ধারণ-করিলে
নিজ মুণ্ড খণ্ড করি করেতে ধরিলে
তিন ধারে রক্ত পড়ে একধারা নিজে পান করে
দু-ধারা দুই ধারে পড়ে দুই ধার দুই যোগিনী॥
সপ্তমে মা ধূমাবতী অষ্টমে বগলা
নবমে মাতঙ্গীরূপ দশমে কমলা
আসা যাওয়া বারেবার প্রাণে তো সহে না আর
নিজ গুণে দয়া কর অজ্ঞান জ্ঞান দায়িনী॥
- ভাবসন্ধান: এটি একটি আদ্যাশক্তি দুর্গার দশমহাবিদ্যা-রূপিণী মহামায়ার দশটি রূপভিত্তিক স্তোত্রধর্মী ভক্তিগীতি। দুরআগ দশটি মহামায়া রূপে জগৎকে আচ্ছন্ন করে রেখেছেন। তাই তিনি সর্বত্র বিরাজমানা। এই গান উল্লেখিত দশমহাবিদ্যা-রূপিণী মহামায়ার দশটি রূপ হলো-
- প্রথম মহাবিদ্যা: মাতৃরূপিণী মহাকালী।
- দ্বিতীয় মহাবিদ্যা: মাতৃরূপিণী তারা।
- তৃতীয় মহাবিদ্যা: ষোড়শী। ত্রিপুরাসুন্দরী নামেও অভিহিতা
- চতুর্থ মহাবিদ্যা: ভুবনেশ্বরী
- পঞ্চম মহাবিদ্যা: ভৈরবী। নারী রূপিণী তীব্র রুদ্রশক্তি। তিনি বিচিত্রিময়ী এবং শিবের মন-বিমোহিনী
- ষষ্ঠ মহাবিদ্যা: ছিন্নমস্তা। এই রূপে তিনি নিজ মুণ্ড খণ্ড করেন। এর ফলে তিনটি ধারায় রক্ত প্রবাহিত হয়, একধারা নিজে পান করেন।
বাকি দুই ধারা দুই যোগিনীকে প্রদান করেন। - সপ্তম মহাবিদ্যা: মা মাতৃরূপিণী ধূমাবতী
- সপ্তম মহাবিদ্যা: বগলা
- অষ্টম মহাবিদ্যা: বগলা
- নবম মহাবিদ্যা: বগলা মাতঙ্গী
- দশম মহাবিদ্যা: কমলা
-
মানবজীবনের পূনর্জনমের ঘূর্ণিতে ভক্ত ক্লান্ত। তিনি বারবার জন্মগ্রহণের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য দেবীর কাছে প্রার্থনা করেছেন- যেন তিনি দয়া করে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তলাভের জ্ঞান দান করেন।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ (ফাল্গুন- চৈত্র ১৩৪৪) মাসে এইচএমভি এই গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করেছিল, এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ৯ মাস।
- রেকর্ড: এইচএমভি। মার্চ ১৯৩৮ (ফাল্গুন- চৈত্র ১৩৪৪)। এন ১৭০৫২। শিল্পী: চিত্তরায়
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: নিখিলরঞ্জন নাথ [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, তেইশতম খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। কার্তিক ১৪০৯ নভেম্বর ২০০২ খ্রিষ্টাব্দ] ষষ্ঠ গান। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ভক্তি (হিন্দুধর্ম, শাক্ত)
- সুরাঙ্গ: ধ্রুপদাঙ্গ
- তাল: ঝাঁপতাল
- গ্রহস্বর: সা