থাকিতে চরণ মরণে কি ভয়, নিমেষে যোজন ফরসা (thakite choron morone ki voy)

থাকিতে চরণ মরণে কি ভয়, নিমেষে যোজন ফরসা,
মরণ-হরণ নিখিল-শরণ জয় শ্রীচরণ ভরসা॥
গর্বের শির খর্ব মোদের? চরণ তেমনি লম্বা!
শৈশব হ’তে আ-মরণ চলি সবারে দেখায়ে রম্ভা।
সার্জেন্ট্‌ যবে আর্জেন্ট-মার হাতে করে আসে তাড়ায়ে
না হয়ে ক্রুদ্ধ পদ প্রবুদ্ধ সম্মুখে দিই বাড়ায়ে॥
বপু কোলা ব্যাংক, রবারের ঠ্যাং প্রয়োজনমতো বাড়ে গো!
সমানে আঁদাড়ে বনে ও বাদাড়ে পগারে পুকুর-পাড়ে গো!
লখিতে চকিতে লঙ্ঘিয়া যায় গিরি দরি বন সিন্ধু,
ঐ এক পথে মিলিয়াছি মোরা, সম মুসলিম-হিন্দু॥
কহিতেছে নাকি বিশ্ব, আমরা রণে পশ্চাতে হেঁটে যাই।
পশ্চাত দিয়ে ছুটে কেউ? হেসে মরিব কি দম ফেটে ছাই?
ছুটি যবে মোরা সুমুখেই ছুটি, পশ্চাতে পাশে হেরি না,
নামনে ছোটারে পিছু হাঁটা বল? রাঁচি যাও, আর দেরি না।
আমাদের পিছে ছুটিতে ছুটিতে মৃত্যু পড়িবে হাঁপায়ে,
জিভ্‌ বার হয়ে পড়িবে যমের, জীবন তখন বাঁ পায়ে।
মোরা দেবজাতি ছিনু যে একদা – আজো তার স্মৃতি চরণে,
ছুটি না তো যেন উড়ে চলি নভে, থাকে নাকো ধুতি পরণে॥
বাপ-পিতামোর প্রদর্ত এ পথ মহাজন-পিষ্ট,
গোস্বামী-মতে পরাহেও বাবা এ পথে মিলিবে ইষ্ট!
ম’রে যদি যাও, তাহ’লে তো তুমি একদম গেলে মরিয়াই!
পলাইল যেই বেঁচে গেল সেই, জনম চরণ ধরিয়াই॥

  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে প্রকাশিত 'নজরুল গীতিকা' গ্রন্থে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এই  সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩১ বৎসর ৩ মাস।
           
  • গ্রন্থ
    • নজরুল-গীতিকা
      • প্রথম সংস্করণ [ভাদ্র ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ। ২ সেপ্টেম্বর ১৯৩০। সোহিনী-একতাল। পৃষ্ঠা ১২২-১২৩]
      • নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। তৃতীয় খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ঢাকা ফাল্গুন ১৪১৩/মার্চ ২০০৭]। নজরুল গীতিকা।  ৯৭। হাসির গান।সোহিনী-একতাল। পৃষ্ঠা: ২৪১]
    • চন্দ্রবিন্দু
      • প্রথম সংস্করণ [সেপ্টেম্বর ১৯৩১, আশ্বিন ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ।]
      • নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, চতুর্থ খণ্ড [জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮, মে ২০১১। চন্দ্রবিন্দু। কমিক গান। শিরোনাম: শ্রীচরণ ভরসা। সোহিনী-একতালা। পৃষ্ঠা: ১৮৫-১৮৭]

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।