বনে বনে দোলা লাগে (bone bone dola lage)
বনে বনে দোলা লাগে।
মনে মনে দোলা লাগে
দখিনা-সমীর জাগে॥
একি এ বেদনা লয়ে
ফুটিল কুসুম হৃদয়ে
আবেশে পুলকে ভয়ে
না-জানা পরশ মাগে॥
কিশোর হৃদয় পুটে
অশোক রঙিন ফোটে
কপোল রাঙিয়া ওঠে
অতনুর অনুরাগে॥
- ভাবার্থ: গানটিতে রয়েছে প্রকৃতি ও মানব মনের শৃঙ্গার রসের মিলনাকাঙ্ক্ষা। বসন্তের দখিনা বাতাসে প্রকৃতিতে লাগে যৌবনের দোলা। এরই ছোঁয়া লাগে প্রকৃতির সন্তান মানুষের মনে। বসন্তের আবির্ভাবে প্রকৃতির যৌবন প্রকাশ পায় মুকুল থেকে প্রস্ফুটিত পুষ্প হয়ে ফুটে ওঠার পুলকে। নবযৌবনের আবেশে থাকে না-জানা পরশের ভয়। নব বসন্তের ছোঁওয়ায় মানুষের মনেও জাগে পাওয়া না পাওয়ার দ্বন্দ্বের কাতরতা। তবু তার যৌবনপুষ্প কাঙ্ক্ষিত হয়ে ওঠে সেই অজানিত পরশের আশায়। না পাওয়ার বেদনাকে অতিক্রম করে সে প্রিয়জনের পরশ প্রার্থনা করে। নব বসন্তের অশোকের রঙিন ফুলের মতই, কিশোর মনে ফুটে ওঠে নবযৌবনের রঙিন ফুল। প্রার্থিত মিলনের ভাবনায় কামদেবতার অনুরাগে কামাবেশে তার সলজ্জ গণ্ডদেশ রঙিন হয়ে ওঠে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ (ডিসেম্বর ১৯২৯) মাসে প্রকাশিত 'চোখের চাতক' সঙ্গীত-সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩০ বৎসর ৬ মাস।
- গ্রন্থ: চোখের চাতক
- প্রথম সংস্করণ অগ্রহায়ণ মাসে (ডিসেম্বর ১৯২৯)। গান ৩৬। ছায়ানট- দাদরা]
- নজরুল-রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ফাল্গুন ১৪১৩। ফেব্রুয়ারি ২০০৭। চোখের চাতক। গান ৩৬। ছায়ানট- দাদরা পৃষ্ঠা: ২১৮-২১৯]
- রেকর্ড: টুইন। সেপ্টেম্বর ১৯৩২ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৩৯)। এফটি ২২১৮। শিল্পী: মিস ঊষারাণী [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: আহসান মুর্শেদ [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, ত্রিশতম খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। আষাঢ়, ১৪১৩/জুলাই ২০০৬] মিস ঊষারাণী-এর রেকর্ডে গাওয়া গান অবলম্বনে কৃত স্বরলিপি। ১৭ সংখ্যক গান। [নমুনা]
- পর্যায়: