রে অবোধ! শূন্য শুধু শূন্য ধুলো মাটির ধরা। (re obodh! shunno shudhu shunno)

রে অবোধ!      শূন্য শুধু শূন্য ধুলো মাটির ধরা।
শূন্য ঐ           অসীম আকাশ রং বেরং-এর খিলান-করা॥
হাওয়াতে        শূন্য নিমেষ নিমেষে যার হয়ে শেষ।
এসেছি           পথিক এ পর-দেশ জীবন-মৃত্যু-ভরা॥

হুরি আর         গানের প্রিয়া, সাথে তার শারাব নিয়া
চলো ঐ         সবুজ-বিথার ঝরনা-কিনার গোলাব-ঝরা॥
এর অধিক     সুখের বিলাস স্বরগে করিসনে আশ,
সে স্বরগ        নাই রে কোথাও এমন উধাও দুখ্-পসরা॥

  • ভাবসন্ধান: গানটি নজরুল ইসলাম ওমর খৈয়ামের রুবাইয়ের সমন্বয়ে তৈরি করেছিলেন। নজরুল ইসলাম তাঁর অনূদিত 'রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম' গ্রন্থের দুটি রুবাই-এর সমন্বয়ে এই গানটি রচিত হয়েছিল।  ১১৮সংখ্যক রুবাই অনুসরণে গানটির স্থায়ী ও প্রথম অন্তরা তৈরি করেছিলেন। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অন্তরা তৈরি করেছিলেন ৬৬ সংখ্যা রুবাই অবলম্বনে।

    ওমর খৈয়াম ছিলেন সুফি দার্শনিক। তবে তাঁর রুবাইগুলো ছিল ভোগবাদী ভাবনাপ্রসূত। এই গানটিতে তার প্রত্যক্ষ প্রভাব লক্ষ্য করা  যায়। এই গানের শুরুতেই কবি নিজেকে অবোধ হিসেবে সম্বোধন করে বলেছেন- এই পৃথিবীর সবকিছু অর্থহীন শূন্য। মাথার উপরে যে রঙিন আকাশ, সেও তেমনি অসীম শূন্যতায় ভরা।  এই শূন্যতার ভিতর দিয়ে মানুষের পার্থিব জীবন শেষ হয়ে যায়। সে শূন্যতার ভিতর দিয়ে চলতে চলতে মানুষ জীবনের অন্তিম দশায় যখন পৌঁছায় তখন পুরো জীবনাটাই অর্থহীন মনে হয়।

    এই ভাবনা থেকে কবি জীবনকে উপভোগ করার স্পৃহা বা উদ্দীপনা খুঁজে পাবার চেষ্টা করেছেন।
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে প্রকাশিত 'নজরুল গীতিকা' গ্রন্থে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এই  সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩১ বৎসর ৩ মাস। ওমর খেয়ামের দুটি রুবাই- নিয়ে এই গানটি তৈরি করা হয়েছিল।
     
  • গ্রন্থ:
    • নজরুল-গীতিকা
      • প্রথম সংস্করণ [ভাদ্র ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ। ২ সেপ্টেম্বর ১৯৩০।  ওমর খৈয়াম-গীতি। ৮। বেহাগ -দাদরা। পৃষ্ঠা ৮]
      • নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। তৃতীয় খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ঢাকা ফাল্গুন ১৪১৩/মার্চ ২০০৭] নজরুল গীতিকা।  ওমর খৈয়াম-গীতি। ৮। বেহাগ -দাদরা। পৃষ্ঠা: ১৭৫]

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।