আজিকে তনু মনে লেগেছে রঙ লেগেছে রঙ (ajike tonu mone legeche rong legeche rong)

আজিকে তনু মনে লেগেছে রঙ লেগেছে রঙ
বধূর বেশে ধরা সেজেছে অভিনব ঢঙ॥
                কাননে আলো-ছায়া
                নয়নে রঙের মায়া
দোলে দোদুল কায়া পরানে বাজিছে সারঙ॥
                সে-রঙে সাগর-কোলে
                কত চাঁদ, রবি দোলে
বাজে গগণ তলে জলদ তালে মেঘ-মৃদঙ॥

  • ভাবার্থ: গানটি প্রকৃতি পর্যায়ের বসন্ত ঋতুর। বসন্তের আগমনে বধূর বেশে প্রকৃতি নানা বর্ণে সেজে উঠেছে। তারই ছোঁয়া লেগেছে কবির দেহ -মনে। বসন্তকাননের শৃঙ্গার রসের আলোছায়ার খেলায়, কবির দেহে জেগে উঠেছে যৌবন দোলা আর মনে বাজছে যৌবন মদির সারঙ্গ রাগের মোহনীয় সুর। বসন্তের রঞ্জিত যৌবনরাগে সাগরের কোলে চাঁদ-সূর্য খেলা করে। আর আকাশে দ্রুত লয়ে বাজে মেঘমৃদঙ্গের যৌবন্-আনন্দ।
     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। গানটি 'আলেয়া' গীতিনাট্যে প্রস্তাবনা'র গান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। গীতিনাট্যে প্রস্তাবনা'য় ব্যবহৃত হয়েছিল।  উল্লেখ্য, কল্লোল পত্রিকার আষাঢ় ১৩৩৬ সংখ্যার সাহিত্য-সংবাদ বিভাগে এ বিষয়ে একটি তথ্য পাওয়া যায়। তথ্যটি হলো-

'নজরুল ইসলাম একখানি অপেরা লিখেছেন। প্রথমে তার নাম দিয়েছিলেন 'মরুতৃষ্ণা'। সম্প্রতি তার নাম বদলে 'আলেয়া' নামকরণ হয়েছে। গীতি-নাট্যখানি সম্ভবত মনোমোহনে অভিনীত হবে। এতে গান আছে ত্রিশখানি। নাচে গানে অপরূপ হয়েই আশা করি এ অপেরাখানি জনসাধারণের মন হরণ করবে।'

এই বিচারে ধারণা করা যায়, গানটি নজরুল রচনা করেছিলেন, ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় (জুন ১৯২৯) মাসের দিকে। কিন্তু, গ্রন্থাকারে প্রকাশের সময়, আলেয়াতে এ গানটি ব্যবহৃত হয় নি। জয়তী পত্রিকার কার্তিক-পৌষ ১৩৩৮ (অক্টোবর ১৯৩১-জানুয়ারি ১৯৩২) সংখ্যায় প্রকাশিত আলেয়ার ৬টি গানের মধ্যে এই গানটি ছিল। পত্রিকায় প্রকাশের সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩০ বৎসর ৫ মাস।

  • পত্রিকা:
    • জয়তী। কার্তিক-পৌষ ১৩৩৮ (অক্টোবর ১৯৩১-জানুয়ারি ১৯৩২)। আলেয়া' গীতিনাট্য। পরে নাটকে গানটি পরিত্যক্ত হয়।
    • নাচঘর [২৩ শে পৌষ ১৩৩৮ (শুক্রবার ৪ জানুয়ারি, ১৯৩১)]
  • গ্রন্থ:
    • সুর-সাকী
      • প্রথম সংস্করণ [আষাঢ় ১৩৩৯ বঙ্গাব্দ। জুলাই ১৯৩২)]।  ৬১ সংখ্যক গান। পাহাড়ী-মিশ্র। সুর-সাকী ৬১
      • নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, চতুর্থ খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। [জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮, মে ২০১১।  সুর-সাকী। ৬১। পাহাড়ী-মিশ্র। পৃষ্ঠা: ২৬০-৬১]
         
  • রেকর্ড: টুইন। এপ্রিল ১৯৩৭ (চৈত্র ১৩৪৩-বৈশাখ ১৩৪৪)। এফটি ৪৮৪৪। শিল্পী: বীণাপাণি (খেঁদি) [শ্রবণ নমুনা]
  • স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:  সুধীন দাশ। [নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, ষষ্ঠ খণ্ড (নজরুল ইন্সটিটিউট, ফাল্গুন ১৪০৩। ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭)-এর ১ম গান। পৃষ্ঠা: ২১-২২] [নমুনা]
  • সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম
     
  • পর্যায়:

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।