হেমন্তিকা এসো এসো হিমেল শীতল বন-তলে
শুভ্র পূজারিণী বেশে কুন্দ-কবরী-মালা গলে॥
প্রভাত শিশির নীরে নাহি’
এসো বলাকার তরণী বাহি’
সারস মরাল সাথে গাহি- চরণ রাখি শতদলে॥
ভরা নদীর কূলে কূলে চাহিছে সচকিতা চখি-
মানস-সরোবর হ'তে-অলক-লক্ষ্মী এলো কি?
আমন ধানের ক্ষেতে জাগে
হিল্লোল তব অনুরাগে,
তব চরণের রঙ লাগে কুমুদে রাঙা কমলে॥
- ভাবার্থ: প্রকৃতি পর্যায়ের এই গানটিতে হেমন্ত ঋতুকে আবাহন করা হয়েছে- হেমন্তের নানা রূপবৈচিত্র্যের সম্ভারে। এসবের মধ্যে প্রধান হয়ে উঠেছে- হেমন্তের সৌন্দর্য ও সৌভাগ্য শ্রী। কবি এই গানটির স্থায়ী ও অন্তরাতে উপস্থাপন করছেন রূপসী হেমন্তকে এবং সঞ্চারী ও আভোগে উপস্থাপন করেছেন কল্যাণী হেমন্তকে।
গানটির স্থায়ী ও অন্তরাতে কবি রূপসী বাংলার হেমন্তকে আবাহন করেছেন- হিমেল শীতল বনভূমিতে- কুন্দ, করবী শোভিত শুভ্র পূজারিণী বেশে, শিশিরস্নাত প্রভাতে, উড়ন্ত বলাকার সারিতে, পদ্মবিলের সারস ও মরালের কলগীতে।
সঞ্চারী ও আভোগে কবি হেমন্তে অনুভব করেছেন মানস সরোবরের অলক-লক্ষ্মীর উপমায়। ভরা নদীর কূলে কূলে সচকিতা চখির মতই কবি ধনধান্যে সমৃদ্ধ বাংলাতে শুভলক্ষ্মীর ছায়া অনুভব করেছেন- আমন ধানের ক্ষেতে প্রবাহিত সৌভাগ্যের আনন্দ-হিল্লোলে। মানস-সরোবরের শুভলক্ষ্মীই অন্নদারূপিণী হয়ে দেখা দেন হেমন্তে। তাঁর রাঙা চরণ-স্পর্শেই যেন রঙিন হয়ে ওঠে হেমন্তের শাপলা-পদ্মবন।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র (১৩৪২) মাসে, টুইন রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ২ মাস।
- রেকর্ড:
- টুইন [আগস্ট ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দ (শ্রাবণ-ভাদ্র (১৩৪২)। শিল্পী: ইন্দুবালা। রেকর্ডটি বাতিল হয়]
- টুইন [অক্টোবর ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দ (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৪২)। শিল্পী: ইন্দু সেন। এফ.টি ৪১০৭] [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: সুধীন দাশ ও ব্রহ্মমোহন ঠাকুর। [নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, একাদশ খণ্ড (নজরুল ইনস্টিটিউট জুন ১৯৯৭)] ২৫ সংখ্যক গান [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, (ঋতু, হেমন্ত)
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
- তাল: কাহারবা
- গ্রহস্বর: মগা