আজ নিশীথে অভিসার তোমারি পথে প্রিয়তম (aj nishithe obhisar tomari pothe priyotomo)

           আজ নিশীথে অভিসার তোমারি পথে প্রিয়তম।
           বনের পারে নিরালায় দিও হে দেখা নিরুপম॥
           সুদূর নদীর ধারে নিরালাতে বালুচরে
           চখার তরে যথা একা চখি কেঁদে মরে
           সেথা সহসা আসিও গোপন প্রিয় স্বপন সম॥
           তোমারি আশায় ঘুরি শত গ্রহে শত লোকে,
(ওগো)  আমারি বিরহ জাগে বিরহী চাঁদের চোখে,
           আকুল পাথার নিরাশার পারায়ে এসো প্রাণে মম॥

  • ভাবসন্ধান: সুফীবাদী বা বাউল দর্শনে মনের মানুষের সাথে (পরমাত্মা), সাধকের  (জীবাত্মা) চিরন্তন মিলনের আকাঙ্ক্ষা, এই গানে উপস্থাপিত হয়েছে। যেন কোনো এক গভীর রাতের ধ্যানমগ্ন পরমভক্ত সাধক তার দয়িতরূপী পর্মাত্মার সাথে মিলনের যাত্রা শুরু করেছেন। মনের মানুষের সাথে মিলনের যাত্রাই হলো তার অভিসার। সংসারের কোলাহল মুক্ত মনোবনের নির্জনে যেন সেই নিরুপম (মনের মানুষ) দেখা দেন, এটাই ভক্তের একান্ত প্রার্থনা

সুদূর নদীর বালুচরে, বিরহ-কাতর চখি, যেমন করে চখার মিলনের প্রত্যাশায় অপেক্ষা করে। সাধক তেমনি সাধনামগ্ন দশায় সংগোপনে মনের মানুষের সাথে মিলনের অপেক্ষা করেন।  সাধকের আকাঙ্ক্ষা, কাঙ্ক্ষিত সেই মনের মানুষ যেন তার একান্ত স্বপনের মতো একান্তে দেখা দিক।

সাধক এই মনের মানুষের সন্ধানে গ্রহান্তরে, লোকলোকান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু তাঁর দেখা পান নি। রাতের পর রাত তিনি নির্ঘুম কাটিয়েছেন, বিরহী চাঁদের মতো সঙ্গহীন সঙ্গীহীন হয়ে। তাই সাধকের একান্ত কামনা, নিরাশার কূলহীন সাগর পেরিয়ে, তাঁর প্রাণের মানুষের দেখা মিলুক। তাঁর অভিসার হয়ে উঠুক সারর্থক।

  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। সবুজ বাংলা পত্রিকার ভাদ্র ১৩৪১ (আগষ্ট-সেপ্টেম্বর ১৯৩৪) সংখ্যায় গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ৩৫ বৎসর ছিল ৩ মাস।
     
  • পত্রিকা: সবুজ বাংলা। ভাদ্র ১৩৪১ (আগষ্ট-সেপ্টেম্বর ১৯৩৪)
  • গ্রন্থ: গানের মালা। অক্টোবর ১৯৩৪, কার্তিক ১৩৪১। [গানের মালা-৮]
  • রেকর্ড: এইচএমভি [অক্টোবর ১৯৩৪ (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৪১)। এফটি ৭২৯৩। শিল্পী: হরিমতী। সুর: কমল দাশগুপ্ত] [শ্রবণ নমুনা]
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: আহসান মুর্শেদ  [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, সাতাশ খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। কার্তিক, ১৪১২/অক্টোবর ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ] প্রথম গান। [নমুনা]
     
  • সুরকার: কমল দাশগুপ্ত
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ভক্তি (সাধারণ)
    • সুরাঙ্গ: গজল

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।