আজি ঈদ্ ঈদ্ ঈদ্ খুশির ঈদ্ এলো ঈদ্ (aji eid eid eid khushir eid elo eid)

   আজি ঈদ্ ঈদ্ ঈদ্ খুশির ঈদ্ এলো ঈদ্
 (যাঁর)  আসার আশায় চোখে মোদের ছিল না রে নিদ॥
          শোন্ রে গাফিল, কি ব’লে তকবির ঈদ্‌গাহে,
(তোর)  আমানতের হিস্‌সা সাদকা দে খোদার রাহে
          নে সাদ্‌কা দিয়ে বেহেশ্‌তে যাবার রসিদ॥
          ঈদের চাঁদের তশ্‌তরিতে জান্নাত হ’তে
          আনন্দেরি শিরনি এলো আসমানি পথে,
          সেই শিরনি নিয়ে নূতন আশায় জাগবে না উম্মিদ॥
(তোর)  পিরাহানের আতর গোলাব লাগুক রে মনে,
(আজ)  প্রেমের দাওত্ দে দুনিয়ার সকল জনে,
          দিলেন ঈদের মারফতে হজরত এই তাগিদ॥

  • ভাবসন্ধান: আসন্ন ঈদের আনন্দ এবং এর মহিমা এই গানে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই আনন্দের মধ্য রয়েছে- জগতবাসীর কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার প্রেরণা।

    ঈদের প্রতীক্ষায় অধীর হয়ে থাকে মুসলিম দুনিয়া। মহামিলনের এই আনন্দোৎসবের প্রতীক্ষায় নিদ্রাহীন রাত্রি কাটায় ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা। যারা অবহেলায় কুড়েমি করে ঈদগাহে যাওয়া থেকে বিরত থাকে, তাদের উদ্দেশ্যে ঈদগাহে  ধ্বনিত (আল্লাহু আকবর ধ্বনি, এর অর্থ- আল্লাহ মহান) শোনার জন্য আহবান করা হয়েছে।  ঈদ উদযাপনের আগে- সবাই যেন তাদের সম্পত্তির হিসাব অনুসারে সাদকা ( কোনো প্রত্যাশা ছাড়া  আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার অভিপ্রায়ে কাউকে কিছু দেওয়া) দেন আল্লাহর পথে। কবি মনে করেন- এই সাদকাই হয়ে উঠবে বেহেশ্‌তে যাবার ছাড়পত্র।

    ঈদের চাঁদকে কবি কল্পলোকে দেখেছেন তশ্‌তরির (ছোট আকারের থালা) মতো। যেন এই তশ্‌তরিতে বেহেশ্‌ত থেকে আনন্দের শিরনি আসে আকাশপথে। আর সেই শিরনি নিয়ে মুসলমানদের মনে যে সর্বকল্যাণকর নতূন আশা মনে জাগে, সেখানে অন্য কোনো উম্মিদের (আশা, আকাঙ্ক্ষা) সাথে কোনো স্থান নেঈ।

    কবির প্রত্যাশা, ঈদের দিনে পিরহানে (পরিধেয় জামা) মাখা আতর-গোলাবের সৌর্ভ যেন  পোশাকের সাথে সাথে মনকেও সুরভিত করে। আল্লার প্রেমের পথে আসার জন্য জগতের সবাইকে দাওয়াত দেওয়ার আহবান করেছেন কবি। মূলত নবি ঈদের খুশির মাধ্যমে এই তাগিদই (প্রেরণা) দিয়েছেন সবাইকে।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৪৪) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ৮ মাস।
     
  • গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ১০৩০ সংখ্যক গান।
  • রেকর্ড:  এইচএমভি  [ফেব্রুয়ারি ১৯৩৮ (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৪৪)। এন ১৭০৪৬। শিল্পী: মহম্মদ কাসেম ও সঙ্গীরা
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলামী গান। ধর্মাঙ্গ। ঈদ। সাধারণ

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।