আধখানা চাঁদ হাসিছে আকাশে(adhkhana chad hashiche akashe)

আধখানা চাঁদ হাসিছে আকাশে
            আধখানা চাঁদ নীচে
            প্রিয়া তব মুখে ঝলকিছে
গগনে জ্বলিছে অগণন তারা
            দু'টি তারা ধরণীতে
            প্রিয়া তব চোখে চমকিছে॥
তড়িৎ-লতার ছিঁড়িয়া আধেকখানি
জড়িত তোমার জরীণ ফিতায় রানী!
অঝোরে ঝরিছে নীল নভে বারি
            দুইটি বিন্দু তারি
           প্রিয়া তব আঁখি বরষিছে॥
মধুর কণ্ঠে বিহগ বিলাপ গাহে,
গান ভুলি' তা'রা তব অঙ্গনে চাহে,
তাহারও অধিক সুমধুর সুর তব
           চুড়ি কঙ্কণে ঝনকিছে॥

  • পাঠভেদ আছে।
      কত ফুল ফোটে ঝরে উপবনে,
      তারি মাঝে আছে ফুটি
      তোমার অধরে গোলাপ-পাপড়ি দুটি।     গানের মালা, ১৯ সংখ্যক গান।
                                                                      [নজরুল-রচনাবলী। ষষ্ঠ খণ্ড। বাংলা একাডেমী,
                                                                      ১২ ভাদ্র ১৪১৪, ২৭ আগস্ট, ২০০৭]
  • ভাবসন্ধান: এটি একটি প্রেমের গান। এই গানে কবি তাঁর প্রিয়ার রূপকে বর্ণনা করেছেন প্রাকৃতিক অনুপম উপকরণের উপমায়। কোনো এক অর্ধ-চন্দ্র-শোভিত আকাশের আধখানা চাঁদের সাথে তিনি তাঁর প্রিয়ার মুখকে কল্পনা করেছেন। যেন আকাশের আধখানা চাঁদ এবং তাঁর প্রিয়ার আধখানা চাঁদরূপী মুখের মিলনে সৃষ্টি হয়েছে পূর্ণপূর্ণিমা। একই সাথে কবি আকাশের অসংখ্য উজ্জ্বল তারার সাথে প্রিয়ার নয়নতারাকে কল্পনা করেছেন।

    আকাশের বিদ্যুৎছটায় যে মনোরম আলোকলতিকা তৈরি হয়, তার মতোই তাঁর প্রিয়ার খোঁপার জরিন ফিতা। অসীম নীল আকাশে যে আলোকবারির দ্যুতিময় অবিরাম বর্ষণ চলেছে, তাঁর দুটি বিন্দু যেন তাঁর প্রিয়ার চোখ থেকে ঠিকরে পড়ছে। সঙ্গিনীর আহ্বান করে পাখি যে সুমধুর গান গায়, তার চেয়েও মধুর কবি-প্রিয়ার কঙ্কনের রিনিঝিনি শব্দ।  তাই মধুকণ্ঠী পাখি তার গান ভুলে গিয়ে, কবি-প্রিয়ার অঙ্গনে কান পেতে রয়।
     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের
     বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ) গানটি গানের মালা প্রথম সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৫ বৎসর ৪ মাস।
  • গ্রন্থ:
    • গানের মালা
      • প্রথম সংস্করণ আশ্বিন ১৩৪১ বঙ্গাব্দ (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ)। ১৯। বেহাগ মিশ্র-দাদরা]
      • নজরুল রচনাবলী ষষ্ঠ খণ্ড [জ্যৈষ্ঠ ১৪১৯, জুন ২০১২। গানের মালা ১৯। বেহাগ মিশ্র-দাদরা। পৃষ্ঠা ২০৪]
    • নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১০৩। রাগ: খাম্বাজ মিশ্র, তাল: কাহারবা। পৃষ্ঠা: ৩৩]
  • রেকর্ড:
    • টুইন [আগষ্ট ১৯৪৩ (শ্রাবণ-ভাদ্র ১৩৪৩)। এফটি ১৩৮৮৫। শিল্পী: জগন্ময় মিত্র (ধরণী মিত্র ছদ্মনামে)। সুর কমল দাশগুপ্ত][শ্রবণ নমুনা]
    • এইচএমভি [ফেব্রুয়ারি ১৯৫১ (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৫৭)। এন ৩১৩১২। শিল্পী: জগন্ময় মিত্র।
  • অন্যান্য শিল্পী: (শ্রবণ নমুনা)]
  • সুরকার:  কমল দাশগুপ্ত
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: ড. রশিদুন্ নবী। নজরুল -সংগীত স্বরলিপি (৩৯তম খণ্ড)। নজরুল ইন্সটিটিউট। ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩/জুন ২০১৬। গান সংখ্যা ১৫। পৃষ্ঠা: ৭৫-৭৭  [নমুনা]
     
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রেম
      • সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের গান
        তাল: দাদরা
        গ্রহস্বর: সা।

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।