আমায় যারা দেয় মা ব্যথা আমায় যারা আঘাত করে (amay zara dey ma byatha amay zara aghat kore)
আমায় যারা দেয় মা ব্যথা আমায় যারা আঘাত করে,
তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী!!
আমায় যারা ভালবাসে বন্ধু ব'লে বক্ষে ধরে, —
তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী!!
আমার আপমান করে যে
মাগো তোরই ইচ্ছা সে যে
আমায় যারা যায় মা ত্যেজে যারা আমার আসে ঘরে,
তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী॥
আমার ক্ষতি করতে পারে অন্য লোকের সাধ্য কি মা;
দুঃখ যা পাই তোরই সে দান, মাগো সবই তোর মহিমা!
তাই পায়ে কেহ দলে যবে
হেসে সয়ে যাই নীরবে,
কে কারে দুখ্ দেয় মা কবে তোর আদেশ না পেলে পরে
তোরই ইচ্ছায় ইচ্ছাময়ী!!
- ভাবসন্ধান: কালী ভক্তের কাছে- মাতৃরূপিণী কালী ইচ্ছাময়ী। তাই সংসারের আনন্দ-বেদনা, দুঃখ-সুখ, মান-অপমান, এরূপ যা কিছু- সবই মাতৃরূপিণী কালীর ইচ্ছাতেই হয়। কালী ভক্ত কবি মনে করেন, যাঁরা তাঁকে আঘাত করেন, যাঁরা বন্ধু বলে তাঁকে বুকে টেনে নেন, যাঁরা নানা ভাবে তাঁকে অপমান করেন, তার সব কিছুই হয় ইচ্ছাময়ী কালীর ইচ্ছায়। তাই কবি মনে করেন, তাঁর ইচ্ছা ছাড়া অন্য লোকের ক্ষতি করার সাধ্য নেই।
জীবনের প্রাপ্ত দুঃখকে কবি মাতৃরূপিণী কালীর দেওয়া মহিমান্বিত দান হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাই যখন কেউ তাঁকে অবহেলায় নিষ্পেষিত করেন, তিনি হাসিমুখে সহ্য করেন। কারণ তিনি মনে করেন- ইচ্ছাময়ীর আদেশ ছাড়া জগতে কেউ কাউকে আঘাত করতে পারেন না।
এই গানটিতে রয়েছে, কালীর কাছে কালীভক্তের আত্মসমর্পণের আত্মমগ্নতা। যেখানে ভক্তের কিছুই করার নেই, ভক্ত শুধু জগতের সকল ঘটনার নিমিত্ত মাত্র।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৩) মাসে, গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর ৩ মাস।
- রেকর্ড: এইচএমভি। সেপ্টেম্বর ১৯৩৬ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৩)। এন ৯৭৮১। মৃণালকান্তি ঘোষ [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: নজরুল -সংগীত স্বরলিপি (৩৯তম ) নজরুল ইন্সটিটিউট। ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩/জুন ২০১৬। গান সংখ্যা ৫। পৃষ্ঠা: ৩৭-৪১ [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম, শাক্ত। শ্যামাসঙ্গীত। আত্মসমর্পণ
- সুরাঙ্গ: ধ্রুপদাঙ্গ
- রাগ: দরবারী-কানাড়া
- তাল: তেওরা
- গ্রহস্বর: ণ্