(আমার) মা আছে রে সকল নামে মা যে আমার সর্বনাম ( [amar] ma ache re sokol name ma je amar sorbonam)
(আমার) মা আছে রে সকল নামে মা যে আমার সর্বনাম।
যে নামে ডাক শ্যামা মাকে পুর্বে তাতেই মনস্কাম॥
ভালোবেসে আমার শ্যামা মাকে
যার যাহা সাধ সেই নামে সে ডাকে,
সেই নামে দেয় রে সাড়া১ কেউ শ্যামা কয়, কেহ শ্যাম॥
এক সাগরে মিশে গিয়ে সকল নামের নদী,
সেই হরি হর কৃষ্ণ ও রাম, দেখিস্ তাঁকে যদি।
নিরাকারা সাকারা সে কভু
সকল জাতির উপাস্য সে প্রভু,
নয় সে নারী নয় সে পুরুষ, সর্বলোকে তাঁহার ধাম॥
- ভাবসন্ধান: গানটিতে কবি শ্যামা নামের মধ্য দিয়ে পরমসত্তার পৌঁছেছেন ক্রমধারায়। গানটিকে সূচনায় শাক্ত সঙ্গীত (শ্যামসঙ্গীত) মনে হলেও- শ্যামা নামের মধ্য দিয়ে- কবি সর্বত্র বিরাজমান পরমসত্তার স্বরূপে পৌঁছেছেন।
এ গানের শুরু হয়েছে মাতৃরূপিণী শ্যামার নামবন্দনা দিয়ে। এই শ্যামাকে যে নামেই ডাকা যাক কেন, সকল নামে তিনি সাড়া দেন এবং ভক্তের মনস্কামনা পূরণ করেন। এখানে শ্যামা বহুরূপিণী কিন্তু অদ্বিতীয়া। তাই বলা হয়েছে যিনি শ্যামা, তিনিই শ্যাম। যেমন নানা নামের নদী সাগরে মিশে একাকার হয়ে যায়, তেমনি অগণন ভক্তের ভক্তির অজস্র নামের স্রোতধারা- পরমসত্তা রূপিণী শ্যামা নামক সাগরে মিশে যায়। হরি (বিষ্ণু), হর (মহাদেব), কৃষ্ণ ও রাম (বিষ্ণুর অবতার) পৃথক সত্ত্বা হলেও, পরমসত্তা রূপে তিনি একই। তিনি কখনো নিরাকার, কখনো সাকার। তিনি নারী বা পুরুষ নন। এখানে এসে মাতৃরূপিণী শ্যামা তাঁর নারী সত্তা হারিয়ে হয়ে যান সর্বত্র বিরাজমান পরমসত্তা।
- রচনাকাল: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪৮) এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে এই গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪২ বৎসর ১ মাস।
- গ্রন্থ:
- রাঙা জবা। কাজী নজরুল ইসলাম। প্রথম সংস্করণ। হরফ প্রকাশনী, কলিকাতা [১৪ এপ্রিল ১৯৬৬)। ১লা বৈশাখ ১৩৭৩] গান সংখ্যা ৮৪। পৃষ্ঠা: ৯২]
- নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। তৃতীয় সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ২০১৮। গান সংখ্যা ১০৮২। পৃষ্ঠা ৩৩১]
- রেকর্ড: এইচএমভি [জুন ১৯৪১ (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)]। এন ২৭১৩৭। শিল্পী: ইলা ঘোষ। সুরকার: চিত্ত রায় [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: আহসান মুর্শেদ [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি সাতচল্লিশতম খণ্ড। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট । ফাল্গুন ১৪২৫/ফেব্রুয়ারি ২০১৯] পৃষ্ঠা: ২২-২৩। [নমুনা]
- পর্যায়