আমার শ্যামা মায়ের কোলে চ'ড়ে (amar shyama mayer kole chore)

আমার  শ্যামা মায়ের কোলে চ'ড়ে জপি আমি শ্যামের নাম
          মা হলেন মোর মন্ত্র-গুরু ঠাকুর হলেন রাধা-শ্যাম॥
                  ডুবে শ্যামা-যমুনাতে
          মা     খেলবো খেলা শ্যামের সাথে
          শ্যাম যবে মোরে হানবে হেলা মা পুরাবেন মনস্কাম॥
          আমার  মনের দোতারাতে শ্যাম ও শ্যামা দুটি তার,
          সেই দোতারায় ঝঙ্কার দেয় ওঙ্কার রব অনিবার।
                  মহামায়া মায়ার ডোরে
                  আনবে বেঁধে শ্যাম-কিশোরে
আমি    কৈলাসে তাই মাকে ডাকি দেখবো সেথা ব্রজধাম॥ 

  • ভাবসন্ধান: এই গানের সাধক একেধারে শাক্ত ও বৈষ্ণব। শ্যাম ও শ্যামা উভয়ই তাঁর কাছে আরাধ্য। শ্যামা তাঁর কাছে মাতৃরূপিণী, আর শ্যাম তাঁর কাছে প্রেমময় সত্তা। তাই শ্যামা মায়ের আশ্রয়ে থেকেই তিনি শ্যামের নাম জপেন। তাঁর কাছে শ্যামা মন্ত্র-দাত্রী গুরু, আর প্রেমময় আরাধ্য  সত্তা হলেন- রাধাকৃষ্ণ। তাই তিনি শ্যামা মায়ের প্রেমলীলাময় যমুনায় এসে শ্যামের প্রেমলীলায় অংশ নিতে চান তাঁর সাথে। সাধক মনে করেন, যদি সে লীলায় শ্যাম তাঁকে অবহেলা করেন, তাহলে তাঁর অপূর্ণ বাসনা পূরণ করে দেবেন মাতৃরূপিণী শ্যামা।

    সাধকের মনের দোতারায় রয়েছে শ্যাম ও শ্যামা নামের দুটি সাধন তার। সেখানে উভয়ের নামেই অবিরাম বাজে ওঙ্কার ধ্বনি। মহামায়ারূপিণী শ্যামার মায়ার বন্ধনে  এ জগৎ মায়াময়। তিনি মনে করে, এই মায়ায় বেঁধে শ্যামা আনবেন শ্যাম-কিশোরকে। তাই সাধক ব্রজধামে ত্যাগ করে কৈলাশে বসে শ্যামা-বন্দনা করেন। কারণ শ্যামা-মায়ের মায়ার বন্ধনে কৈলাশ হয়ে উঠবে ব্রজধাম।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৩ বঙ্গাব্দ) মাসে নজরুল এইচএমভি রেকর্ডের জন্য রচনা করেছিলেন 'বিদ্যাপতি' নামক পালা-নাটিকা। এই গানটি নাটিকাতে ছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর ৩ মাস।
     
  • রেকর্ড:  
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: সালাউদ্দিন আহ্‌মেদ [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, পঁচিশতম খণ্ড,  নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। ভাদ্র, ১৪১২/আগস্ট ২০০৫  খ্রিষ্টাব্দ]  পঞ্চম গান। [নমুনা]
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। শাক্ত-বৈষ্ণব। আরাধনা
    • সুরাঙ্গ: টপ্পা
    • রাগ: জয়জয়ন্তী
    • তাল: যৎ
    • গ্রহস্বর: সরা

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।