আমার হাতে কালি মুখে কালি, মা (amar hate kali mukhe kali,ma)
তাল: দাদ্রা
আমার হাতে কালি মুখে কালি, মা
আমার কালি মাখা মুখ দেখে মা পাড়ার লোকে হাসে খালি॥
মোর লেখা পড়া হ'ল না মা,
আমি 'ম' দেখতেই দেখি শ্যামা,
আমি 'ক' দেখতেই কালী ব'লে নাচি দিয়ে করতালি॥
কালো আঁকা দেখে মা ধারাপাতের ধারা নামে আঁখি পাতে,
আমার বর্ণ পরিচয় হ'লো না মা
তোর বর্ণ বিনা কালী।
যা লিখিস মা বনের পাতায়
সাগর জলে আকাশ খাতায়,
আমি সে লেখা তো পড়তে পারি
মূর্খ বলে দিক্ না গালি মা,
লোকে মূর্খ ব'লে দিক্ না গালি॥
- ভাবসন্ধান: প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত বা প্রথাগত বিশ্বাসে দীক্ষিত না হওয়ায় পাড়ার লোকে, কবিকে মূর্খ, পাগল ভেবে হাসাহাসি করে। কিন্তু কবির অন্তর জুড়ে রয়েছে কালী। তাই প্রথাগতভাবে তাঁর বর্ণ পরিচয় না হলেও, তিনি 'ম' বর্ণের ভিতরে শ্যামাকে খুঁজে পান এবং 'ক' বর্ণের ভিতর কালীকে দেখতে পান এবং এই দর্শনে তাঁর হৃদ্য় পরমানন্দে নেচে উঠে। কবির চিত্তে গণিতের ধারাপাতের হিসাব প্রবেশ করে না, বরং কালী দর্শনের জন্য কবিচিত্ত উদ্বেলিত হয়ে উঠে। কবি প্রথাগতভাবে লিখতে পড়তে পারেন না। কিন্তু কালী ভক্তির জোরে জগৎ জুড়ে তিনি কালীর মহিমা উপলব্ধি করতে পারেন। তাই লোকে তাঁকে মূর্খ বলে গালি দিলেও, তাতে তিনি ভ্রূক্ষেপ করেন না। বরং জগৎ সংসারের ভিতরে কালীকে উপলব্ধি করেন, এটাই তাঁর অহঙ্কার।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল (চৈত্র ১৩৪৮-বৈশাখ ১৩৪৯) মাসে এইচএমভি থেকে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪২ বৎসর ১১ মাস।
- রেকর্ড: এইচএমভি [এপ্রিল ১৯৪২ (চৈত্র ১৩৪৮-বৈশাখ ১৩৪৯)]। রেকর্ড নম্বর এন ২৭২৬৫। শিল্পী: কে. মল্লিক। সুরকার: চিত্ত রায় [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- নীলিমা দাস। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, ঊনত্রিশতম খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। শ্রাবণ ১৪১৩/আগষ্ট ২০০৬] দ্বিতীয় গান। [নমুনা]
- সুরকার: চিত্ত রায়
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ভক্তি (হিন্দুধর্ম, শাক্ত)
- সুরাঙ্গ: রামপ্রসাদী সুর
- তাল: দাদরা
- গ্রহস্বর: গা