আমার হৃদয় মন্দিরে ঘুমায় গিরিধারী (amar hridoy mondire ghumay giridhari)
আমার হৃদয় মন্দিরে ঘুমায় গিরিধারী।
জাগে আমার জাগ্রত প্রেম দুয়ারে তার দ্বারী॥
কানু আমার বুকে ঘুমায় —
ভক্তি জেগে চামর ঝুলায়,
শিয়রে দীপ আমার আঁখি, প্রীতি দাসী তারি॥
চোরের মত মোর গুরুজন ঘুরুক কাছে কাছে —
আমি তাদের ভয় করিনে, (আমার) প্রেম যে জেগে আছে।
আধেক রাতে নিরালাতে
জাগবে হরি, ধরবে হাতে,
ওগো ধ্যান করে গো সেই আশাতে এ প্রাণ রাধা-প্যারী॥
- ভাবসন্ধান: কৃষ্ণের প্রতি রাধার গভীর প্রেম ও ভক্তির অনুভব এই গানে ফুটে উঠেছে, নানা রূপকতায়। রাধার হৃদয়-মন্দিরে, অবচেতনে বিরাজ করেন গিরিধারী (কৃষ্ণ)। আর রাধার জাগ্রত প্রেম যেন দ্বারী হয়ে যেন বিরাজ করে সে প্রেমমন্দিরের দ্বারে। এই হৃদি-মন্দিরে কৃষ্ণের ঘুমন্ত অঙ্গে ভক্তিভরে প্রেমের চামর (ঝুন্ত পাখায়) দুলান। রাধার চোখ তাঁর শিয়রে দীপ হয়ে আলো ছাড়ায়, আর তাঁর প্রীতি দাসী হয়ে বিরাজ করে।
গুরুজনেরা রাধার এই প্রেমের বাধা হয়ে- চোরের মতো ঘুরে মরে তাঁর চারপাশে। রাধা তাঁদের উপেক্ষা করেন, কারণ, তাঁর প্রেম-লীলা চলে হৃদি-মন্দিরে। সেখানে আর কারো প্রবেশাধিকার নেই। তাঁর গোপন লীলায়- তিনি আধেক রাত কাটাবেন নিরালায় প্রেম-ভক্তি মার্গে, আর সেই অমোঘ প্রেমের টানে কৃষ্ণ জেগে উঠবেন, ধরবেন তাঁর হাত। এই আশাতেই কৃষ্ণের প্রাণ রাধা-প্যারী হয়ে অপেক্ষা করবেন। এবং ধরা দেবেন প্রেম-অনুরাগিণী হয়ে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪২) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ১ মাস।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ৬৬৬। তাল: দাদরা। পৃষ্ঠা: ২০২]
- নজরুলের হারানো গানের খাতা [নজরুল ইনস্টিটিউট, ঢাকা। আষাঢ় ১৪০৪/জুন ১৯৯৭। গান সংখ্যা ১২৩। for Dhiren Das (HMV)। পৃষ্ঠা: ১৫০।
- রেকর্ড: এইচএমভি [জুলাই ১৯৩৫ (আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩৪২)]। এন ৭৩৮৯। শিল্পী: ধীরেন দাস [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: নজরুল -সংগীত স্বরলিপি (৩৯তম ) নজরুল ইন্সটিটিউট। ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩/জুন ২০১৬। গান সংখ্যা ১৭। পৃষ্ঠা: ৮২-৮৫ [নমুনা]
- পর্যায়: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণবসঙ্গীত। রাধা-কৃষ্ণ-লীলা। প্রণয় কামনা।
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের সুর
- তাল: দাদরা
- গ্রহস্বর: রস