আমি আল্লার ডাকে ছুটে যাই যবে (ami allar dake chute jai jobe)

পুরুষ  :  আমি আল্লার ডাকে ছুটে যাই যবে
           তুমি মোনাজাত কর গো নীরবে,
স্ত্রী     :  তুমি যে খোদার দেওয়া সওগাত মম বেহেশ্‌তের সাথি॥
পুরুষ  :  তুমি হেরেমের বন্দিনী নহ তুমি যে ঘরের বাতি।
স্ত্রী     :  তুমি যে ঈদের চাঁদ! তব তরে জাগিয়া কাটাই রাতি॥
পুরুষ  :  তুমি নারী আগে আনিলে ঈমান দ্বীন ইসলাম ’পরে,
স্ত্রী     :  তুমি যে বিজয়ী খোদার রহম আনিয়াছ জয় ক’রে!
পুরুষ  :  আজি দুর্বল মোরা তোমারে ত্যজিয়া
স্ত্রী     :  দাঁড়াইব পাশে উঠহ জাগিয়া,
উভয়ে :  হাতে হাত ধরি’ চলি যদি মোরা জাগিবে নূতন জাতি ─
                                     দুনিয়া আবার উঠিবে মাতি’॥

  • ভাবসন্ধান: ইসলাম ধর্মে সাম্যের বিচারের নারী-পুরুষের কোনো প্রভেদ নেই। ধর্মাচরণ এবং ধর্ম প্রতিষ্ঠায় নারী-পুরুষ পরস্পরের পরিপূরক। 'তরুণ মুসলিম সমিতি'র সদ্স্য হিসেবে পরিবেশিত এই দ্বৈত সঙ্গীতে এই নিগূঢ় ভাবনাই উপস্থাপিত হয়েছে।  ইসলাম ধর্মের আদর্শে পুরুষ যখন আল্লাহর আহ্বানে ছুটে চলেন ঘরের বাইরে। ঘরে তখন নারী নীরবে আল্লাহকে স্মরণ করেন মোনাজাতে বসে।  সংসার জীবনে নারী পুরুষের কাছে বেহেস্তের উপহার স্বরূপ। এই নারী হেরেমে বন্দিনী নয়, সে সংসার নামক ঘর উজ্জ্বলকারিণী বাতি। নারীর কাছে পুরুষ সংযম শেষে, কিম্বা কু প্রবৃত্তির বলিদান শেষে আনন্দদায়ী ঈদের চাঁদের মতো।

    নবী তাঁর নবুয়ত প্রাপ্তির পর প্রথম, তাঁকে নবী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী খাদিজা (রাঃ)। তিনিই  প্রথম দ্বীন ইসলামের উপর ইমান এনেছিলেন। আর ইসলাম রক্ষার স্বার্থে পুরুষ যুদ্ধ করেছেন এবং খোদার করুণায় বিজয়ী  হয়ে ফিরেছেন।

    কালের বিবর্তনে নারী তাঁর সকল অধিকার হারিয়ে হয়ে পড়েছে গৃহবন্দিনী।  তাই ইসলামী দুনিয়া দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই তরুণ নারী পুরুষের প্রবল প্রতীজ্ঞা, নারী আবার উঠে দাঁড়াবে পুরুষের পাশে। উভয়ে হাতে হাত ধরে এগিয়ে যাবে নূতন জগৎ তৈরি প্রতীজ্ঞায়। আবার ইসলামের নব জাগরণে জগৎ মহিমান্বত হয়ে উঠবে।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর  (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৭) মাসে, টুইন রেকর্ড কোম্পানি থেকে এই গানটির প্রথম রেকর্ডে প্রকাশিত হয়েছিল। সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ৩ মাস।
     
  • গ্রন্থ:
    • নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট, মাঘ ১৪১৭, ফেব্রুয়ারি ২০১১) নামক গ্রন্থের ১০৯৬ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৩৩৫।
  • রেকর্ড:
    • টুইন [সেপ্টেম্বর ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৭)]। এফটি ১৩৪৩৫। শিল্পী: তরুণ মুসলিম সমিতি
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলাম। সাম্য

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।