আমি প্রভাতী তারা পূর্বাচলে (ami probhati tara purbachole)
আমি প্রভাতী তারা পূর্বাচলে
আশা-প্রদীপ আমি নিশির শীশ-মহলে॥
রাতের কপোলে আমি ছলছল অশ্রুর জল,
আমি ধরণীতে হিম-কণা টলমল, নব দুর্বাদলে॥
নব অরুণোদয়ের আমি ইঙ্গিত
বিহগ-কণ্ঠে আমি জাগাই শুভ-সঙ্গীত।
আমি কনক-কদম তিমির নীপ শাখায়
আমি মধ্যমণি মালিকায়, শ্যাম গগন-গলে॥
ভাবসন্ধান: মহাবিশ্বের সকল উপকরণ নিয়ে বিস্তৃত যে প্রকৃতি, প্রভাতী তারা (শুক্রগ্রহ) তার একটি উপাদান। প্রকৃতি পর্যায়ের এই গান মূলত প্রভাতী তারার বন্দনা। এই গানে কবি প্রভাতের শুকতারার মহিমা বর্ণনা করেছেন নানা উপমায় এই প্রভাতী তাঁর স্বগোক্তিতে।
তিনি মনে করেন পুবাকাশের প্রভাতী তারা যেন রাতের শীশ-মহলের আশার প্রদীপ হয়ে দ্যূতি ছড়ায়। এই আশা হলো রাত্রি শেষে দিনের আলোর আশা। তাঁর কাছে মনে হয়েছে প্রভাতী তারা যেন রাত্রি শেষের বিদায়-বিধুর কপোলে জমে থাকা অশ্রু, যেন নব দুর্বাদলে জমে থাকা টলমল হিমকণা।
সঞ্চারীতে কবি এই তারাকে নতুন ভোরের নতুন সূর্যের অগ্রদূতের মতো ইঙ্গিতময় বলে মনে করেছেন। এই তারাই প্রতিটি ভোরে পাখির কাকলি হয়ে নবদিনের প্রথম শুভসঙ্গীতে, চরাচরকে জাগিয়ে তোলে । এই তারা যেন রাত্রিরূপী কদমের শাখে স্বর্ণকদম হয়ে জেগে থাকে এবং শ্যামল আকাশের কণ্ঠহারের মধ্যমণি হয়ে বিরাজ করে। এই বিচারে ভোরের তারা যেন বিশ্বসংসারের শুভলক্ষ্মী।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। সঙ্গীত-বিজ্ঞান প্রবেশিকা পত্রিকার আষাঢ় ১৩৪১ (জুন-জুলাই ১৯৩৪) সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৫ বৎসর ১ মাস।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৭। ফেব্রুয়ারি ২০১১)। গান- ১৭৪। পৃষ্ঠা: ৫৫।
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৭। ফেব্রুয়ারি ২০১১)। গান- ১৭৪। পৃষ্ঠা: ৫৫।
- পত্রিকা:
- সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রকাশিকা। আষাঢ় ১৩৪১ (জুন-জুলাই ১৯৩৪)। জগৎ ঘটক-কৃত স্বরলিপি-সহ প্রকাশিত হয়েছিল। [নমুনা]
- রেকর্ড: এইচএমভি। জুলাই ১৯৩৬ (আষাঢ়- শ্রাবণ ১৩৪৩)। এন ৯৭৩৮। শিল্পী: অনিমা বাদল। সুরকার: নজরুল ইসলাম
- সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম।
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- ড. রশিদুন্ নবী। নজরুল -সংগীত স্বরলিপি (৩৯তম খণ্ড)। নজরুল ইন্সটিটিউট। ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩/জুন ২০১৬। গান সংখ্যা ১৩। পৃষ্ঠা: ৬৬-৬৮ [নমুনা]
- শ্রীজগৎ ঘটক। সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রকাশিকা। আষাঢ় ১৩৪১ (জুন-জুলাই ১৯৩৪)। [নমুনা]
- পর্যায়: