আসিবে তুমি, জানি প্রিয় (asibe tumi , jani priyo)
আসিবে তুমি, জানি প্রিয়!
আনন্দে বনে বসন্ত এলো ─
ভুবন হ’ল সরসা প্রিয়-দরশা, মনোহর॥
বনান্তে পবন অশান্ত হ’ল তাই, কোকিল কুহরে,
ঝরে গিরি-নির্ঝরিণী ঝর ঝর॥
ফুল্ল-যামিনী আজি ফুল-সুবাসে
চন্দ্র অতন্দ্র সুনীল আকাশে,
আনন্দিত দীপান্বিত অম্বর॥
অধীর সমীরে দিগঞ্চল দোলে
মালতী বিতানে পাখি পিউ পিউ বোলে,
অঙ্গে অপরূপ ছন্দ আনন্দ-লহর তোলে;
দিকে দিকে শুনি আজ আসিবে রাজাধিরাজ প্রিয়তম সুন্দর॥
- ভাবার্থ: এই গানের কাঙ্ক্ষিত প্রিয়তম রাজাধিরাজ বসন্ত। ঋতুরাজ তার অতুল সৌন্দর্য বৈভব নিয়ে বিরাজ করে কবির মনোলোকে। তার সমাদরের জন্যই যেন প্রকৃতিতে বসন্ত আসে শৃঙ্গার রসে সরসা হয়ে, প্রিয়দর্শী মনহরা হয়ে।
সে আসবে বলে বসন্তের বাতাস যৌবন-চাঞ্চল্যে অশান্ত হয়ে ওঠে, কোকিল সঙ্গলাভের আশায় মুখর হয়ে ওঠে। পাহাড়ি ঝর্না ঝরে ঝরঝর ধ্বনির অনুরণনে। ফুলের সৌরভে প্রফুল্ল হয়ে ওঠে রাত্রি, নীলাকাশে বিনিদ্র রজনী কাটায় চাঁদ। আকাশ হয়ে ওঠে আনন্দ-প্রভায় দিপান্বিত।
তাঁর আগমনের অধীর প্রতীক্ষায় দিগাঞ্চলে দোলা লাগে, মালতী-বিতান মুখরিত হয়ে ওঠে পাপিয়ার পিউ পিউ ডাকে। অপরূপ ছন্দের দোলায় প্রকৃতিতে ওঠে আনন্দ লহর। কবির প্রিয়তম রাজাধিরাজ আসবে বলেই প্রকৃতির সর্বত্র ধ্বনিত হয়- তার আগমনী বার্তা।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৮শে এপ্রিল (বৃহস্পতিবার ১৫ বৈশাখ ১৩৪৫), এইচ.এম.ভি. রেকর্ড কোম্পানির সাথে নজরুলের যে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়, তাতে এই গানটি ছিল। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৩৮ বৎসর ১১ মাস।
- রেকর্ড: এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানির সাথে নজরুলের চুক্তি। ২৮শে এপ্রিল ১৯৩৮ (বৃহস্পতিবার ১৫ বৈশাখ ১৩৪৫)। [শ্রবণ নমুনা]
- বেতার: কলকাতা বেতারকেন্দ্র। ৩ আগষ্ট ১৯৩৮ (বুধবার, ১৮ শ্রাবণ ১৩৪৫)। বিকাল ৫.৬ টা। শিল্পী নিতাই ঘটক। রাগ: পটমঞ্জরী।
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
- নিতাই ঘটক। সঙ্গীতাঞ্জলি, প্রথম খণ্ড (জেনারেল প্রিন্টার্স য়্যান্ড পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, ১৩৭৫। পৃষ্ঠা: ৩-৪] [নমুনা]
- পর্যায়: