ইয়া আল্লাহ্, তুমি রক্ষা কর (iya allah tumi rokhha koro)
ইয়া আল্লাহ্, তুমি রক্ষা কর দুনিয়া ও দ্বীন্।
শান-শওকতে হোক পূর্ণ আবার নিখিল মুস্লেমিন।
আমিন আল্লাহুম্মা আমিন॥
(খোদা) মুষ্টিমেয় আরববাসী যে ঈমানের জোরে
তোমার নামের ডঙ্কা বাজিয়েছিল দুনিয়াকে জয় ক'রে
(খোদা) দাও সে ঈমান, সেই তরক্কী, দাও সে একিন্।
খোদা দাও সে একিন্।
আমিন আল্লাহুম্মা আমিন॥
হায়! যে-জাতির খলিফা ওমর শাহানশাহ্ হয়ে
ছেঁড়া কাপড় প'রে গেলেন উপবাসী র'য়ে
আবার মোদের সেই ত্যাগ দাও, খোদা
ভোগ-বিলাসে মোদের জীবন ক'রো না মলিন।
আমিন আল্লাহুম্মা আমিন॥
(খোদা) তুমি ছাড়া বিশ্বে কারো করতাম না ভয়
তাই বিশ্বে হয়নি মোদের কভু পরাজয়
দাও সেই দীক্ষা শক্তি সেই ভক্তি দ্বিধাহীন।
আমিন আল্লাহুম্মা আমিন॥
- ভাবসন্ধান: এই গানের মাধ্যমে সকল মুসলমানদের আল্লাহর করুণা লাভের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে। চার তুকের এই গানটির প্রতিটি তুক পৃথক পৃথক প্রার্থনা হিসেবে গণ্য করা যায়। কারণ প্রতিটি তুকের শেষে উচ্চারিত হয়েছে- ইসলামি রীতি অনুসারে প্রার্থনা শেষের প্রথাগত বাণী- আমিন আল্লাহুম্মা আমিন ( হে আল্লাহ আপনি কবুল করুন) ।
গানটির স্থায়ীতে বলা হয়েছে- যেন এই দুনিয়া ও দ্বীন (ধর্ম) আল্লাহ রক্ষা করেন এবং যেন আবার পূর্ণ হয়ে ওঠে বিশ্বের সকল মুসলমানদের জাঁজমকপূর্ণ গৌরবময় জীবন।
গানটির প্রথম অন্তরাতে বলা হয়েছে- হে আল্লাহ, দূর অতীতে কতিপয় আরববাসী আল্লাহর প্রতি ইমান এনে তাঁর নামের বিজয় ডঙ্কা বাজিয়েছিল, জয় করেছিল দুনিয়া। তেমনি ইমান যেন পান মুসলমানরা, পান তরক্কী (ইমানের উন্নতি) এবং একিন (ইমানের প্রতিফলন)।
গানটির দ্বিতীয় অন্তরাতে খলিফা ওমরের গৌরবময় শাসনের উদাহরণ টেনে বলা হয়েছ- সেই শাহানশাহ খলিফা ওমর, যিনি নিজে ছেঁড়া পোশাক পরে, নিজে উপবাসী হয়ে জনসাধারণকে অন্নবস্ত্রের সংস্থান করেছেন। তেমনি করে আল্লাহ যেন মুসলমানদের ত্যাগের মানসিকতা দান করেন। যেন ভোগবিলাসের দ্বারা মুসলমানদের জীবন মলিন না হয়ে যায়।
গানটির তৃতীয় অন্তরাতে কবি আল্লাহর কাছে এমন প্রার্থনা করেছেন- মুসলমানরা যেন আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় না পান। এই অভয় শক্তির কারণে অতীতে মুসলমানদের পরাজয় হয় নি। কবি সেই অভয় শক্তি এবং দ্বিধাহীন ভক্তি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। সব শেষে উচ্চারিত হয়েছে প্রার্থনার প্রথাগত বাণী- আমিন আল্লাহুম্মা আমিন (হে আল্লাহ আপনি কবুল করুন) ।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল (চৈত্র ১৩৪৬-বৈশাখ ১৩৪৭) মাসে টুইন রেকর্ড কোম্পানি গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করে। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ১০ মাস।
- রেকর্ড। টুইন। এপ্রিল ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ (চৈত্র ১৩৪৬-বৈশাখ ১৩৪৭)। এফটি ১৩২৬১। শিল্পী: গোলাম হায়দার অ্যান্ড পার্টি। সুর: গোলাম হায়দার [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি: সুধীন দাশ। নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি চতুর্দশ খণ্ড (নজরুল ইন্সটিটিউট)। আষাঢ় ১৪০৩ (জুন ১৯৯৬)। পঞ্চম গান। রেকর্ডে গোলাম হায়দার অ্যান্ড পার্টির গাওয়া গানের সুরানুসারে স্বরলিপি করা হয়েছে। [নমুনা]
- সুরকার: গোলাম হায়দার
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলামী গান। হামদ। প্রার্থনা
- সুরাঙ্গ: স্বকীয়
- তাল: দাদরা
- গ্রহস্বর: না