উঠুক তুফান পাপ-দরিয়ায় (uthuk tufan pap-doriyay)
উঠুক তুফান পাপ-দরিয়ায় ওরে আমি কি তায় ভয় করি।
ও ভাই আমি কি তায় ভয় করি।
পাক্কা ঈমান তক্তা দিয়ে গড়া যে আমার তরী।
ও ভাই গড়া যে আমার তরী॥
'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহুর' পাল তুলে,
ঘোর তুফানকে জয় ক'রে ভাই যাবই কূলে,
মোহাম্মদ মোস্তাফা নামের (ও ভাই) গুণের রশি ধরি'॥
খোদার রাহে সঁপে দেওয়া ডুববে না মোর তরী,
সওদা ক'রে ভিড়বে তীরে সওয়ার মানিক ভরি'।
দাঁড় এ তরীর নামাজ, রোজা, হজ্ ও জাকাত,
উঠুক না মেঘ, আসুক বিপদ — যত বজ্রপাত,
আমি যাব বেহেশ্ত বন্দরেতে রে এই সে কিস্তিতে চড়ি'॥
- ভাবসন্ধান: এই গানে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ইমানি শক্তির মহিমা তুলে ধরা হয়েছে। এই গানে রূপকার্থে ইমানকে পাকা তক্তা আর পাপরাশিকে বিপজ্জনক সাগরের সাথে তুলনা করা হয়েছ। এই পাপ সাগরের ঝড়ঝঞ্ছা ইমান দিয়ে গড়া নৌকার কোনো ক্ষতি করতে পারে না। তাই পাকা ইমানদার মুসলমান কোন কিছুতে ভয় পায় না।
এই নৌকার পাল হলো-'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু'। এই পালের গুণের রশি হলো মোহাম্মদ মোস্তাফা নাম।
এই পাল তুলে আর আর রশির গুণেই ইমনাদারের নৌকা পাপের সাগর উতরে যাবে। কারণ এই নৌকা দেওয়া হয়েছে আল্লার রাহে (পথে)। এর দাঁড় হলো- নামাজ, রোজা, হজ্ ও জাকাত। তাই যতই মেঘরূপী পাপ বিপদ হয়ে আসুক, যতই বজ্রপাত হোক, ইমানদারের বিশ্বাসের এই তরী কখনো ডুববে না। ঠিকই ইসলামের দেয়া-নেয়ার বাণিজ্য শেষে এই নৌকা ইমানের জোরে বেহেশ্তের বন্দরে পৌঁছাবেই।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪২) মাসে, টুইন রেকর্ড কোম্পানি থেকে এই গানটির রেকর্ড প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৬ বৎসর ৩ মাস।
- রেকর্ড: টুইন [সেপ্টেম্বর ১৯৩৫ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪২)। এফটি ৪০৭৫। শিল্পী আব্বাস উদ্দিন [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
- সেলিনা হোসেন। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, একান্নতম খণ্ড, কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, আষাঢ় ১৪২৭। জুন ২০২১। রেকর্ডে আব্বাস উদ্দিনের গাওয়া গানের সুরানুসারে স্বরলিপি করা হয়েছে। গান সংখ্যা ৫। পৃষ্ঠা: ২৯-৩৩। [নমুনা]
- সেলিনা হোসেন। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, একান্নতম খণ্ড, কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, আষাঢ় ১৪২৭। জুন ২০২১। রেকর্ডে আব্বাস উদ্দিনের গাওয়া গানের সুরানুসারে স্বরলিপি করা হয়েছে। গান সংখ্যা ৫। পৃষ্ঠা: ২৯-৩৩। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলামি গান। ধর্মাঙ্গ। ইমান
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের সুর
- তাল: কাহারবা
- গ্রহাস্বর: গা