অবিরত বাদর বরষিছে ঝরঝর (obiroto bador boroshichhe jhorojhoro)
অবিরত বাদর বরষিছে ঝরঝর
বহিছে তরলতর পূবালী পবন।
বিজুরী-জ্বালার মালা
পরিয়া কে মেঘবালা
কাঁদিছে আমারি মত বিষাদ-মগন॥
ভীরু এ মন-মৃগ আলয় খুঁজিয়া ফিরে,
জড়ায়ে ধরিছে লতা সভয়ে বনস্পতিরে,
গগনে মেলিয়া শাখা কাঁদে বন-উপবন॥
- ভাবার্থ: ধ্রুব চলচ্চিত্রের জন্য রচিত এ গানটিতে বর্ষার একটি বিরহবিধুর নিটল চিত্ররূপ পাওয়া যায়। গানটির প্রথম অন্তরার শেষ পঙ্ক্তিতে গানটির বর্ষাকে বিরহের রসে সিক্ত করা হয়েছে এবং এই বিরহ রূপটি গানের শেষ অব্দি রয়ে গেছে।
ঝরঝর অবিরল বর্ষণ এবং সজল পুবালি বাতাসের উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে গানটিতে বর্ষার আবহ সৃষ্টি করা হয়েছে। অন্তরার প্রথম দুটি পঙ্ক্তিতে- রূপকতার মধ্য দিয়ে- বিদ্যুৎচমকের মালা পরিহিতা মেঘাবলিকার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু চলচ্চিত্রের বিরহবিধুর নায়িকার কাছে বর্ষার এই রূপ বিষাদিত হয়ে গেছে। তাই অবিরল বর্ষা ধারা তার কাছে বিষাদিনী রূপে ধরা দিয়েছে, শেষ পঙ্ক্তিতে।
নায়িকার ভীরু মন-হরিণ তার প্রেমিকের সান্নিধ্যের আশায় ব্যাকুল। ঝঞ্ছা-বিক্ষুব্ধ বর্ষায় ভীতু লতারাজি আশ্রয়ের আশায় বৃক্ষকে জড়িয়ে ধরে, কিন্তু নায়িকার আশ্রয়ের আশা তাঁর প্রেমিক। তাকে কাছে পায় না বলে- তার এই হাহাকার। বন-উপবনের গাছগুলো আশ্রয়হীন শাখাগুলো যেমন আকাশের কাছে আস্রয়ের জন্য কাকুতি জানায়, প্রেমিকের জন্য আশ্রয়হীনা নায়িকার হাহকারও তেমনি।
- রচনাকাল ও স্থান: ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারি ‘ধ্রুব’ নামক চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। এই চলচ্চিত্রে গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৪ বৎসর ৭ মাস।
- চলচ্চিত্র: ধ্রুব। ক্রাউন টকি হাউস। ১ জানুয়ারি ১৯৩৪ (সোমবার, ১৭ পৌষ ১৩৪০)। সুনীতির গান। শিল্পী আঙ্গুরবালা] [দৃশ্য-শ্রাব্য নমুনা]
- করিম হাসান খান [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: ইদ্রিস আলী। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, পঞ্চাশতম খণ্ড, কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, কার্তিক ১৪২৬। জুন নভেম্বর ২০১৯। আঙ্গুর বালা-র গাওয়া গানের সুরানুসারে স্বরলিপি করা হয়েছে। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি ও প্রেম, নাট্যগীতি
- সুরাঙ্গ: খেয়ালাঙ্গ
- রাগ: মিয়াঁ কি মল্লার
- তাল: ত্রিতাল
- গ্রহস্বর: ধন্