কৃষ্ণ কৃষ্ণ বোল রে মন, কৃষ্ণ কৃষ্ণ বোল্ (krishno krishno bol re mon, krishno krishno bol)

কৃষ্ণ কৃষ্ণ বোল রে মন, কৃষ্ণ কৃষ্ণ বোল্
কৃষ্ণ কৃষ্ণ বোল রে মন, প্রেমের লহর তোল্
                            রে মন মায়ার বন্ধন খোল॥
নিরালা হৃদয়-যমুনাতে কে বাজায় বাঁশি আধেক রাতে
তুই কুল ভুলে চল তাহারি সাথে প্রেম-আনন্দে দোল্।
                            ও তুই প্রেম-আনন্দে দোল্॥
সে গোলক হতে ভালবাসে গোকুল বৃন্দাবন
মধুর প্রেমের-ভিখারি সে মদন মোহন।
প্রেম দিয়ে যে বাঁধতে পারে, সাধ করে তার কাছে হারে
মুনি-ঋষি পায় না তারে গোপীরা পায় কোল্।
                            ও তার গোপীরা পায় কোল্॥

  • ভাবসন্ধান: বৈষ্ণব মতে কৃষ্ণকে পাওয়াই পরম লক্ষ্য। ভক্তিপ্রেমের মহিমায় কৃষ্ণকে পাওয়ার প্রধান অবলম্বন হলো কৃষ্ণ নামের জপ করা। এই গানে কৃষ্ণনামের ভক্তি ও প্রেম মাধুর্যের মহিমা উপস্থাপিত হয়েছে।

    কবি এই গানের মাধ্যমে  সকল সংসার-মায়ার বন্ধন ছিন্ন করে কৃষ্ণপ্রেমে মগ্ন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষ্ণনামের মাধ্যমে। তিনি মনে করেন- এই নামজপের মাধ্যমে ভক্তি প্রেমের ঢেউ তুলে জাগতিক সব মোহ থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব।

    হৃদ-যমুনার জনহীন তীরে কৃষ্ণের বাঁশী বেজে ওঠে। সেটাও কৃষ্ণনামেরই নামান্তর। সে বাঁশির টানে গোপীরা যেমন সব কুল ভুলে কৃষ্ণের সাথে মিলিত হওয়ার আকাঙক্ষায় অভিসারে গিয়েছিল, তেমনি কৃষ্ণভক্তকেও জাগতিক সকল বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে কৃষ্ণকে পাওয়া আনন্দে আত্মহারা হয়ে তাঁর সাথে মিলিত হওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে।

    কবি মনে করেন, কৃষ্ণ তাঁর গোলকধাম থেকেও বৃন্দাবনকে বেশী ভালোবাসেন। তাই তিনি বৃন্দাবনবাসীর মধুর প্রেমের-ভিখারি রূপে গোকুল মদন-মোহন (মদন বা কামদেবকেও মোহিত করেন যিনি) হয়ে বিরাজ করেন। একমাত্র প্রেম দিয়েই কৃষ্ণকে বাঁধা যায়। ধ্যানের ও ভক্তি দিয়ে মুনি-ঋষিরা তাঁকে পায় না। কিন্তু গোপীরা তাঁকে পায় তাঁদের নিবেদিত প্রেমের মহিমায়। এই নিবেদিত প্রেমের উপস্থাপিত হয় মহিমান্বিত কৃষ্ণনামের মাধ্যমে।

     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি (পৌষ-মাঘ ১৩৪৩) মাসে, টুইন রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির একটি রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল।  এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর ৭ মাস।
     
  • রেকর্ড: টুইন [জানুয়ারি ১৯৩৭ (পৌষ-মাঘ ১৩৪৩)। এফটি ৪৭৪৮। শিল্পী: আশুতোষ মুখোপাধ্যায়] [শ্রবণ নমুনা]
     
  • স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, পঞ্চদশ খণ্ডভাদ্র ১৪০৩। আগষ্ট ১৯৯৬।  ১৪ সংখ্যাক গান। রেকর্ডে আশুতোষ মুখোপাধ্যায়-এর গাওয়া গানের সুরানুসারে স্বরলিপি করা হয়েছে। [নমুনা]
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণব। কৃষ্ণ-প্রেম
    • সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
    • তাল: কাহারবা
    • গ্রহস্বর: পা

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।