আমার কালো মেয়ে পালিয়ে বেড়ায় কে দেবে তায় ধ’রে (amar kalo meye paliye beray ke debe tay dhore)
আমার কালো মেয়ে পালিয়ে বেড়ায় কে দেবে তায় ধ’রে
তারে যেই ধরেছি মনে করি অমনি সে যায় স’রে॥
বনের ফাঁকে দেখা দিয়ে
চঞ্চলা মোর যায় পালিয়ে,
দেখি ফুল হয়ে মা’র নূপুরগুলি পথে আছে ঝ'রে॥
তার কণ্ঠহারের মুক্তাগুলি আকাশ-আঙিনাতে
তারা হয়ে ছড়িয়ে আছে দেখি আধেক রাতে।
কোন মায়াতে মহামায়ায়
রাখবো বেঁধে আমার হিয়ায়
কাঁদলে যদি হয় দয়া তার তাই কাঁদি প্রাণ ভরে॥
- ভাবসন্ধান: মাতৃরূপিণী কালী কবির কাছে যেন চির পলাতকা, তাই তাঁর আক্ষেপ- কে তাঁর সন্ধান দেবেন। কবির যখনই মনে হয়েছে- দেবীর সন্ধান পেয়েছেন- তখনই তিনি হারিয়ে গেছেন। মনের মনোবনের ফাঁকে দেখা দিয়ে চঞ্চলা দেবী পালিয়ে যান। কবি তাঁর কল্পলোকের অনুভবে মনে করেন- পলাতকা দেবীর পায়ের নূপুর যেন বনপথে ঝরাফুল হয়ে পড়ে রয়েছে। তাঁর কণ্ঠহারের মুক্তাগুলো যেন তারা হয়ে আকাশে ছড়িয়ে আছে রাতের আকাশ-আঙিনাতে।
কবি জানেন না, এই পলাতকাকে মহামায়াকে (কালী) কোন মায়ার বন্ধনে ধরে রাখবেন। কবি মনে করেন না, পাওয়ার বেদনায় যদি প্রাণভরে কাঁদতে পারেন, তাহলে হয়তো তিনি ধরা দেবেন। এই প্রত্যাশায় তিনি প্রাণ ভরে কাঁদেন।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল (চৈত্র ১৩৪৩-বৈশাখ ১৩৪৪) মাসে এইচএমভি থেকে গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর ১১ মাস।
- রেকর্ড: এইচএমভি। এপ্রিল ১৯৩৭ (চৈত্র ১৩৪৩-বৈশাখ ১৩৪৪)। এন ৯৮৭৭। কুমারী বিজনবালা ঘোষ (কালী) [শ্রবণ নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: সেলিনা হোসেন [একবিংশ খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা] চতুর্থ গান। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। শাক্ত। শ্যামাসঙ্গীত। অন্বেষণ
- সুরাঙ্গ: স্বকীয়
- তাল: দাদরা
- গ্রহস্বর: মজ্ঞা